Header Ads

Header ADS

We want our sisters to stop trading like market products


Welcom to my website Soyaeb Hossain


বাজারী পণ্যের মতো আমাদের বোনদের বেচাকেনা বন্ধ চাই, নিচু মানের ভিক্ষাবৃত্তির অবসান চাই।

,
#জাহেলী যুগে হাটবাজারে মেয়েরা বেচাকেনা হইত । পনের শত বছর পর আজও সেই জাহেলী প্রথা থেকে আমরা সরে আসতে পারিনি। পার্থক্য শুধু এটাই, তখন অবহেলিত অবস্থায় বাজার ঘাটে মেয়েরা বিক্রি হ‌ইত আর এখন ঘর থেকে সম্মানে মেয়েটাকে কিনে নেওয়া হয়। দর কষাকষির পর সম্ভব না হইলে ফেলে রেখে চলে যায়। এইভাবে পাত্রপক্ষের সাথে দাম দর করে মেয়ে বিক্রি দিয়ে সম্মানিত বোনদেরকে প্রতিনিয়ত অপমানিত ও লাঞ্ছিত করা হচ্ছে।
#সিলেট আর চট্টগ্রামের মেয়েদের দাম সবচেয়ে বেশি। আমাদের সিলেটে একটা মেয়ে বিক্রি হয় ৮/১০ লক্ষ টাকা দিয়ে, নগদ গুনতে হয় ৫/৬ ভরি সোনার দাম। রূপে-গুণে ও সুন্দরের তারতম্যে দাম‌ও উঠানামা করে। কমপক্ষে ৪/৫ লক্ষ টাকা হাতে না থাকলে বিয়ের চিন্তা করাই যেন অপরাধ। প্রতিদিনই বিয়ে-শাদী হচ্ছে। তবে মানুষের সাথে মানুষের নয়, টাকার সাথে রূপের। ফলে চড়াও দাম দিয়ে মেয়ে কেনার সাধ্য না থাকলে যুবকেরা বাধ্য হয়ে বিয়ের চিন্তা বাদ দিয়ে মেয়েদের সাথে প্রেম করে টাইম পাস করে। শেষ ভরসা হিসেবে পতিতালয়ে আশ্রয় নেয়। (নাউজুবিল্লাহ)
#কনেকে বেশি দেওয়া অপরাধ নয় বরং এটা প্রশংসার দাবি রাখে। আল্লাহ তা'আলা বলেন, واتيتم إحداهن قنطارا এই আয়াতের স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে মেয়েকে পাহাড়সম সম্পদ দিলেও কোনো অপরাধ নয় তবে সেটা নির্ভর করবে বরের সামর্থের উপরে। সামর্থের বাহিরে কোনো বোঝা চাপিয়ে দেওয়া শরীয়তের দৃষ্টিতে মারাত্মক অপরাধ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কোনো বিয়ের প্রস্তাব আসলেই তিনি জিজ্ঞেস করতেন তুমি স্ত্রীকে কি দিতে পারবা? তিনি যেটা দিতে পারতেন সেটাকে মোহর ধার্য ধরে বিয়ে দেওয়া হইত। পাত্র দিতে না পারলে তাঁর পক্ষ থেকে রাসূলুল্লাহ দিয়ে দিতেন নতুবা তাকে বলতেন বউকে কুরআন মুখস্থ করাও, এর বিনিময় বিয়ে করো। এটাই তোমার জন্য মোহর।
,
#পরিবারে অশান্তির অন্যতম বড়ো কারণ হচ্ছে দর কষাকষি করে মোহর ঠিক করে বিয়ে করা। জীবনের সবচেয়ে বড়ো ধাপের সূচনাই যদি হয় সুন্নতের বাহিরে গিয়ে তাহলে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে কিভাবে? এখান থেকেই মূলত পরিবারের অশান্তির যাত্রা শুরু।
#প্রথমে যখন চড়াও মূল্যে মেয়েকে কিনে নেওয়া হয় তখন সেটা উসল করার জন্য স্বামী তাকে তৎপর। এই জন্য প্রথমেই যৌতুক দাবি করে। যদিও আমাদের সমাজে যৌতুক দাবি শোনা যায় না তবে অঘোষিত অবস্থায় বড়ো অংকের যৌতুক দিতে হয়। কেননা বাবা-মাও ভালো করে জানেন, 10 লক্ষ টাকা দিয়ে মেয়ে বিক্রি করেছি, এখন যৌতুক (দেইন) না দিলে স্বামীর বাড়ি মেয়েকে টিকনো মুশকিল হয়ে পড়বে।
#যৌতুক দিয়েই বাবা-মার দায়িত্ব শেষ নয়। মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর থেকেই তাদের উপার্জনের বড় অংশ মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকদের খুশি রাখার জন্য সব সময় রেডি রাখতে হয়। বিয়ের দিন আড়াই-তিনশো বরযাত্রীকে খাওয়াইতে হয় অথচ খাওয়ানোর কথা ছিল বরের পক্ষ থেকে।
#বিয়ের পরে জামাইয়ের চৌদ্দগুষ্টির সবাইকে খাওয়ানোর একটা ঘৃণ্য রীতি আমাদের সমাজে প্রচলিত। এটাকে ফিরা খাওয়া বলে। শুধু খাওয়াইলেই এটা তেমন অপরাধ হিসেবে গণ্য হতো না কিন্তু যারা যাবে প্রত্যেককেই পুরুষ হইলে একটা করে লুঙ্গি, মহিলা হইলে একটা করে শাড়ি সবাইকে দিতে হয়। এর পরে স্ত্রীর বাড়ি থেকে এইভাবে সবাই স্বামীর বাড়ি দাওয়াত খাইতে আসবে। তাদেরকেও এইভাবে শাড়ি-লুঙ্গি দিতে হয়। এই দুইটা মিলে একটা বিয়ের অনুষ্ঠান‌ই বলা যায়।
,
#আনুষ্ঠানিকভাবে উভয়পক্ষের গুষ্টিকে খাওয়ানোর পরে মোটামুটি বরপক্ষ শান্তি।
কিন্তু মেয়ের বাড়ির লোকদের শান্তি নাই। প্রতি মৌসুমে মৌসুমে গুনতে হয় বড়ো অঙ্কের টাকা।
#আম-কাঁঠালের মৌসুমে বাসে, ট্রাকে সিএনজিতে, ঠেলা গাড়ি, ভ্যান গাড়ি যা দিয়ে যেভাবেই পারেন একটা অংশ মেয়ের বাড়ি পৌঁছাতে হবে। না দিলে যে শ্বশুরবাড়ি মেয়ের নিস্তার নাই ।
,
#রমজান মাস আসার আগেই মা-বাবার টেনশন। মেয়ের বাড়ি ইফতার দিতে হবে। প্রথম রমজানে, মধ্যম রমজানে ও শেষ রমজানে; এক মাসে তিনবারে কমপক্ষে ৩০/৪০ হাজার টাকা ক্যাশ রাখতে হয়। টাকা না থাকলে চুরি করে, ডাকাতি করে, ভিক্ষা করেও ম্যানেজ করতে হয়। কোনো মা-বাবা দুই তিনটা মেয়ে সন্তান জন্ম দিলেই প্রতিনিয়ত চিন্তায় ভোগেন , এগুলো ছাড়াবেন কিভাবে, এইসব ব্যবস্থা করবেন কিভাবে? অবস্থা এমন কঠিন হয়েছে, এখন বাবা-মা কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়াই পাপ মনে করেন।
#কেননা, এইসব করতে না পারলে মেয়েকে শুনতে হয় শ্বশুরবাড়ির লোকদের নানান কথা, সহ্য করতে হয় অনেক অপমান। প্রতি নিহত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ভোগ করতে হয়। হিন্দু ধর্ম থেকে ভেসে আসা এই কুসংস্কার ও কালচারের ফলে অসংখ্য পরিবার ভাঙ্গনের ঘটনা ঘটছে। সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট হচ্ছে , বাধ্য হয়ে মেয়েকে আত্মহত্যাও করতে হচ্ছে। মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে। এইসব ঘৃণ্য রীতির বেড়াজালে বিয়ে বন্দি রেখে জেনার রাস্তা উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে।
#কেননা যে সমাজে বিয়ে কঠিন হয় সেই সমাজে যিনা-ব্যভিচার সহজ হয়ে যায়। আমরা এই সব কুসংস্কার থেকে পরিত্রান চাই, এই ঘৃণ্য রীতির বিলুপ্তি চাই। এটা এক ধরনের ভিক্ষাবৃত্তি। এই ভিক্ষাবৃত্তি থেকে সমাজকে মুক্ত করতে চাই। মোহর নির্ধারণ করার সময় দর নিয়ে কষাকষি করে সম্মানিত বোনদের টানাহেঁচড়া থেকে বাঁচাতে চাই। এই জন্য প্রয়োজন আমাদের সচেতনতা, প্রয়োজন শিক্ষিত সমাজের উদ্যোগ।
,
#আমরা সবাই সমস্বরে এইসব কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি, সর্বপ্রথম নিজের পরিবার থেকে উদ্যোগ নেই। এই ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন আলেমসমাজ। মসজিদের সম্মানিত ইমামগণ খুতবায় ও ওয়ায়েজগণ তাঁদের ওয়াজের মাহফিলে এইসব কুসংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলার মাধ্যমে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি সম্ভব। বিভিন্ন সমিতি ও সংস্থার পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণ ও বিভিন্ন সেমিনার করলেও এই ঘৃণ্য প্রথা বিলুপ্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি আশা করি।

No comments

Powered by Blogger.